[gtranslate]

টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে দিশেহারা যমুনা তীরবর্তী হাজারো মানুষ


প্রাচেস্টা নিউজ প্রকাশের সময় : জুলাই ৩, ২০২৩, ৬:০৮ পূর্বাহ্ণ / ৫৪
টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে দিশেহারা যমুনা তীরবর্তী হাজারো মানুষ

শাহবুদ্দিন তালুকদার পুন্য : যমুনা নদীতে বাড়ছে পানি। পাশাপাশি নদী তীরবর্তী এলাকায় দেখা দিয়েছে ব্যাপক ভাঙন। চোখের সামনে নিমিষেই বিলীন হচ্ছে বসতভিটা, ঘরবাড়ি, ফসলি জমিসহ নানা স্থাপনা। এতে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন নদীপাড়ের হাজারো মানুষ। নির্ঘুম রাত কাটছে তাদের। কেউ কেউ সরিয়ে নিচ্ছেন নিজেদের ঘরবাড়ি, আবার অনেকেই ঘরবাড়ি সরিয়ে নেওয়ার সুযোগটুকুও পাচ্ছেন না। অসহায় এসব মানুষ নীরবে ভাঙন দেখছেন। বলছি টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলার বেশ কয়েকটি গ্রামে যমুনা নদীর ভাঙনের কথা। এলাকাবাসীর অভিযোগ, নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন এবং ফসলি জমি কেটে বালু বিক্রি করার কারণে এভাবেই যমুনার তীরে ভাঙন দেখা দিয়েছে। ইতোমধ্যে উপজেলার প্রায় অর্ধশতাধিক বসতভিটা, আবাদি জমি, রাস্তাঘাটসহ নানা স্থাপনা নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙন রোধে পানি উন্নয়ন বোর্ডের ফেলা জিওব্যাগও কাজে আসছে না। জানা যায়, উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও কয়েক সপ্তাহ ধরে টানা বৃষ্টিতে যমুনা নদীতে আশঙ্কাজনকহারে পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে নদী তীরবর্তী এলাকাগুলোতে ব্যাপক ভাঙন দেখা দিয়েছে। এছাড়া চরাঞ্চলে তিল, পাটসহ নানা ধরনের ফসল পানিতে তলিয়ে যাচ্ছে। এতে চরম বিপাকে পড়েছেন চরাঞ্চলবাসী। মানবেতর জীবনযাপন করছেন ভাঙন কবলিতরা। তাছাড়া এখন পর্যন্ত ভাঙনরোধে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। সরেজমিন গোবিন্দাসী, কষ্টাপাড়া, ভালকুটিয়া, চিতুলিয়াপাড়া, খানুরবাড়ী, কোনাবাড়ী, মাটিকাটা, সিরাজকান্দি, পাটিতাপাড়া, সারপলশিয়া, নলশিয়া, ন্যাংড়া বাজার, রায়ের বাশালিয়া, কুঠিবয়ড়া, অর্জুনা, জগৎপুরা, বাসুদেবকোল, রামাইল, মেঘারপটল এলাকাসহ অর্ধশত গ্রামে যমুনার তীরে ব্যাপক ভাঙন দেখা দিয়েছে। চিতুলিয়াপাড়া গ্রামের জিলকদ বলেন, কয়েক সপ্তাহ ধরে তীব্র ভাঙন শুরু হয়েছে। এতে এক দিনেই আমার বসতভিটা যমুনা নদী গিলে খেয়েছে। বাড়ির পাশে থাকা জমিও নদীতে চলে গেছে বহু আগেই। এখন সব হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে গেছি। আমার থাকার জায়গাটুকুও আর নেই। ৫/১০ কেজি চাল দিয়ে কী করব। এসব দরকার নেই। আমরা ভাঙন কবলিতরা ত্রাণ চাই না, ভাঙনরোধে বাঁধ চাই। একই গ্রামের জামাল উদ্দিন বলেন, আমরা নদীভাঙন এলাকার মানুষ। চোখের সামনে বসতভিটা, ঘরবাড়ি ও ফসলি জমি নদীর পেটে চলে যাচ্ছে। যারাই আসে, তারা শুধু দেখে চলে যায়। আর বলে আগামী বছরই বাঁধ করে দেওয়া হবে। কিন্তু ফের বন্যা আসে, শুরু হয় ভাঙন। প্রভাবশালীরা নিজ নিজ বাড়ির আঙিনায় জিওব্যাগ ফেলে। আমাদের বসতভিটা রক্ষায় কেউ কথা রাখে না। অন্যের জায়গায় থাকতে হচ্ছে। এদিকে শনিবার দুপুরে গোবিন্দাসী ইউনিয়নের চিতুলিয়াপাড়াসহ ভাঙনের শিকার বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করেছেন সংসদ-সদস্য তানভীর হাসান ছোট মনির। তিনি ভাঙনরোধে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়াসহ বাঁধ নির্মাণ করে দেওয়ার আশ্বাস দেন। এতে উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মনিরুল ইসলাম বাবু, গোবিন্দাসী ইউপি চেয়ারম্যান মো. দুলাল হোসেন চকদার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। ইউএনও মো. বেলাল হোসেন বলেন, ভাঙনের বিষয়টি জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ ঊধ্বর্তন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে এবং জিওব্যাগ ফেলা শুরু হয়েছে।