[gtranslate]

সপ্তম কাউন্সিল দ্রুত করতে চায় বিএনপি


প্রাচেস্টা নিউজ প্রকাশের সময় : জানুয়ারি ৩০, ২০২৪, ২:০৯ অপরাহ্ণ / ৫০
সপ্তম কাউন্সিল দ্রুত করতে চায় বিএনপি

নিজস্ব প্রতিবেদক: আন্দোলনের পাশাপাশি সংগঠন গোছানোর উদ্যোগ নিচ্ছে বিএনপি। গতকাল বিএনপির নীতিনির্ধারকদের এক বৈঠকে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়া দ্রুত দলের কাউন্সিল অনুষ্ঠানের ব্যাপারে সবুজ সংকেত দিয়েছেন বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। তবে কখন কিভাবে এই কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হবে সে সম্পর্কে কোন নিশ্চিত তথ্য পাওয়া যায়নি। ওই বৈঠকে যোগ দেওয়া দলের একজন স্থায়ী কমিটির সদস্য বাংলা ইনসাইডারকে বলছেন, তারা দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সহ শীর্ষ নেতাদের মুক্তির অপেক্ষা করছে। আগামী কিছু দিনের মধ্যে তারা মুক্তি পাবেন বলে আশা করা হচ্ছে। তাদের মুক্তি পেলেই দ্রুত কাউন্সিলের কথা চিন্তা করা হবে।

ওই নেতা আরও বলেছেন, সামনে রোজা শুরু হচ্ছে। এরপর বর্ষাকাল সবকিছু মিলিয়ে কাউন্সিল কত দ্রুত সময়ে করা যায় সেটি তাদের চিন্তার মধ্যে আছে। তবে বিএনপির অন্য একজন নেতা বলেছেন, তারা খুব ঘটা করে কাউন্সিল না করে বর্তমান বাস্তবতায় যেহেতু দল আন্দোলনের মধ্যে আছে, সংক্ষিপ্ত আকারে যে কোন সময় একটি কাউন্সিল করে ফেলতে চায় এবং নেতৃত্বের একটা বড় ধরনের রদবদল ঘটাতে চায়। আর এই কারণে দ্রুত কাউন্সিল করার প্রক্রিয়া গ্রহণ করা হচ্ছে বলে জানা গেছে।

বিএনপির অন্য একজন নেতা বলেছেন, সপ্তম কাউন্সিল করা হবে তাদের আন্দোলনেরই একটি অংশ। এই কাউন্সিলের কারণে আন্দোলন বন্ধ হবে না। বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে যে আন্দোলন এখন চলছে সেটিও অব্যাহত রেখেই কাউন্সিল অনুষ্ঠান করা হবে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, ৭ জানুয়ারির নির্বাচনের পর বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে এক ধরনের হতাশা দেখা দিয়েছে। অনেক দলত্যাগ করছেন, অনেকে দলের নিয়মিত কর্মকান্ডগুলোতেও অংশগ্রহণ করছে না। এরকম বাস্তবতায় সংগঠন পুনর্গঠন এবং নেতাকর্মীদের চাঙ্গা করার জন্য তাগিদ দেওয়া হয়েছে। তাছাড়া আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ও বিএনপির অভ্যন্তরের গণতন্ত্র নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। দলে গণতন্ত্র নেই। নয় বছর ধরে একটি দলের কাউন্সিল না হওয়াটাকে অনেকে হাস্যকর বলে মনে করছে। তাছাড়া পরপর দুটি নির্বাচনে নেতৃত্ব দিয়ে সীমাহীন ব্যর্থতা এবং ভুল রাজনৈতিক কৌশল নিয়ে তারেক জিয়াও এখন দলের ভিতর আগের অবস্থানে নেই। বরং তাকে নিয়ে এখন প্রকাশ্যে সমালোচনা করা হচ্ছে।

অনেক নেতাই বলছেন, বিএনপির এই অবস্থার জন্য তারেক জিয়াই দায়ী। তার নেতৃত্বের ব্যর্থতা রয়েছে, সঠিক কৌশল তিনি গ্রহণ করতে পারেননি। আর এ কারণেই অনেকে তারেক জিয়াকে মূলধারার নেতৃত্ব থেকে সরে যাওয়ার জন্য বলছেন। এমনকি ইউরোপীয় ইউনিয়ন সহ অন্তত তিনটি দেশের কূটনীতিকরা বিএনপিকে তারেকের নেতৃত্ব মুক্ত হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে গ্রহণযোগ্যতার জন্য এর কোন বিকল্প নেই।

তারেক জিয়াও সাম্প্রতিক সময়ে অন্তত দুটি ভিডিও কনফারেন্সে নিজেই সরে যাওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, দলের প্রয়োজনের, দলের স্বার্থ সুরক্ষার জন্য তিনি সরে যেতে প্রস্তুত। এ রকম বাস্তবতায় বিএনপি মনে করছে, তাদের সংগঠনকে পুনর্গঠন করার কোনো বিকল্প নেই। আর এ জন্য দলের কাউন্সিল করতে হবে। সর্বশেষ ২০১৬ সালের ১৯ মার্চ বিএনপি তাদের ষষ্ঠ কাউন্সিল করেছিল। এরপর দলটি আর কোন কাউন্সিল করেনি। এই কাউন্সিল না করার ফলে একদিকে যেমন বিএনপির অনেক নেতাকর্মী যারা দলের কর্মকাণ্ডে নেই, অসুস্থ্ বা দেশ ত্যাগ করেছেন তারা এখনো নেতৃত্বে আছেন। ফলে নেতৃত্বে একটা শূন্যতা তৈরি হয়েছে। অন্যদিকে তরুণরা গতাশ হয়ে যাচ্ছেন। তারা কিসের আশায় আন্দোলন করবেন এই প্রশ্ন তুলছেন। এরকম বাস্তবতায় বিএনপি ঈদের পরপর সপ্তম হাতীয় কাউন্সিল অনুষ্ঠানের চিন্তা ভাবনা করছে বলে জানা গেছে। আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই এটি চূদান্ত হবে।

তবে বিএনপির একজন নেতা বলছেন, মির্জা ফখরুল আলমগীরের বের না হওয়ার আগ পর্যন্ত কাউন্সিলের ব্যাপারে বিএনপি কোনো আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত জানাবে না।