
স্টাফ রিপোর্টার: কুমিল্লা
পরকীয়ার মামলায় আবুল হাশেম (৩০) নামক একজন পরকীয়া প্রেমিককে ৫ বছর সশ্রম কারাদন্ড প্রদান করা হয়েছে। ফৌজদারী দন্ড বিধির ৪৯৭ ধারায় ৫ (পাঁচ) বছরের কারাদন্ড ও ২০,০০০/- (বিশ হাজার) টাকা অর্থদন্ড আনাদায়ে আরো ১ (এক) মাসের কারাদন্ডের আদেশ আবুল হাসেমের বিরুদ্ধে প্রমানিত হওয়ায় এ রায় দেওয়া হয়।
মঙ্গলবার (১২ মার্চ ২০২৪ ইং) কুমিল্লা চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত এর বিজ্ঞ বিচারক সোহেল রানা এ রায় ঘোষণা করেন।
আবুল হাশেম নিজ বাড়ি হতে প্রায় ১২ কিলোমিটার দূরে দেবিদ্বার উপজেলার নিউ মার্কেট এলাকায় কাঁচা মালের আড়ৎ পরিচালনা করতো। সেই সুযোগে দেবিদ্বার উপজেলার ব্রাহ্মণখাড়া গ্রামের মোঃ বাশারের স্ত্রী আবিদার সহিত পরিচয় হয় কুমিল্লা বুড়িচং উপজেলার মিথলমা গ্রামের মৃত মোঃ ইসমাইল এর পুত্র আবুল হাশেম (৩০) এর সহিত। আবুল হাসেম বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে পরকীয়া প্রেমে জড়িয়ে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করে। ২০১৫ সালের ১৪ এপ্রিল বিকালে বাড়ির পাশে পুকুরপাড়ে পরকীয়া প্রেমিক আবুল হাশেমের সাথে আবিদা-কে দেখতে পেয়ে জিজ্ঞেস করলে মামলার ভিকটিম আবিদা মেলামেশার বিষয়ে স্বীকার করে। পরে বিষয়টি মিমাংসা করার জন্য এলাকাবাসীর সাথে এই নিয়ে আলোচনা হয়। শেষ না হওয়ার কারণে ১৫ এপ্রিল ২০১৫ সালে মামলার ভিকটিম আবিদার স্বামী মোঃ বাশার বাদী হয়ে ফৌজদারী দন্ড বিধির ৪৯৭ ধারায় দেবিদ্বার থানায় মামলা দায়ের করেন। যাহার জি,আর মামলা নম্বরঃ ১৩৫/২০১৫ ইং, দেবিদ্বার থানার মামলা নং-১৮, তারিখ-১৫/০৪/২০১৫ইং। মামলায় আবুল হাশেম কে আসামী করা হয়।
দেবিদ্বার থানার তদন্তকারী কর্মকর্তা এস.আই আরিফুল ইসলাম তদন্ত করে প্রাথমিকভাবে ঘটনার সত্যতা পেয়ে ২০১৫ সালের ১২ই আগষ্ট আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
আদালত অভিযোগপত্র গ্রহণ করে পলাতক আসামীর বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারী করেন। পরে মামলাটি বিচারের জন্য প্রস্তুত হলে আদালতে ০৭ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ, আবিদা'র সাথে পরকীয়া প্রেমিক আবুল হাশেম এর কথোপকথনের মোবাইল ফোনের কল লিষ্ট পর্যালোচনা, আলামত প্রদর্শন, আসামী আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ, যুক্তিতর্ক সহ বিচারের সকল প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে মামলাটি রায় ঘোষণার জন্য মঙ্গলবার ১২ মার্চ ২০২৪ ইং তারিখ দিন ধার্য করা হয়। রায় ঘোষণার দিনে পরকীয়া প্রেমিক পলাতক ছিল। পলাতক প্রেমিক আসামী আবুল হাশেম'কে দোষী সাবস্থ্য করে চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিজ্ঞ বিচারক জনাব সোহেল রানা ফৌজদারী দন্ড বিধির ৪৯৭ ধারায় ৫ (পাঁচ) বছরের সশ্রম কারাদন্ড ও ২০,০০০/- (বিশ হাজার) টাকা অর্থদন্ড অনাদায়ে আরো ১(এক) মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ড প্রদান করেন।
এই ঘটনায় বাদী পক্ষের বিজ্ঞ আইনজীবী মজিবুর রহমান (এ.পি.পি) বলেন, ফৌজদারী দন্ড বিধির ৪৯৭ ধারায় বলা হয়েছে, যে কোন বিবাহিত ব্যক্তি যদি অন্য কোন বিবাহিত নারীর সাথে জেনেশুনে যৌন সম্পর্ক করে, তাহলে তা ব্যভিচার বলে গণ্য হবে। এ ক্ষেত্রে সেই পুরুষটির ৫ বছরের কারাদন্ড, অর্থদন্ড বা উভয় দন্ডের বিধান রয়েছে। বাদী রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছে এবং আসামী আবুল হাশেমকে দ্রুত গ্রেফতার করে শাস্তির আওতায় আনার জোর দাবী জানান।