সুপ্রিয় সাংবাদিক ভাই ও বোনেরা, আসসালামু আলাইকুম। সবাইকে জানাচ্ছি আমার আন্তরিক শুভেচ্ছা ও কৃতজ্ঞতা। আজ এমন একটি লজ্জাজনক এবং ঘৃণ্য চক্রান্তের বিষয় আপনাদের সামনে উপস্থাপন করবো যা কেবল বাংলাদেশ নয় সমগ্র বিশ্বের রাজনীতিতে বিরোধী মতের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা প্রচারের একটি জঘন্য উদাহরণ হিসেবে মাইলফলক হয়ে থাকবে। আপনারা জানেন, বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মহোদয় শুধু লন্ডনে বসে প্রযুক্তির সহায়তায় দেশের আনাচে কানাচে বিএনপি’র নেতাকর্মীদের সাথে যোগাযোগ রাখছেন। এই যোগাযোগের জন্য প্রধানত: ব্যবহার করা হয় জুম নামে একটি অ্যাপ। স¤প্রতি সরকারপন্থী কয়েকটি অনলাইন প্লাটফর্ম এবং মিডিয়া আউটলেট থেকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মহোদয় এর জুম মিটিংয়ে দেয়া বক্তব্যকে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ব্যবহারের মাধ্যমে বিকৃত ডিপ ফেইক ভিডিও তৈরি করে দেশে—বিদেশে থাকা বিএনপির শুভানুধ্যায়ীদের কাছে চাঁদাবাজি করা হচ্ছে। আবার সেই চাঁদাবাজির ভিডিও প্রচার করা হচ্ছে।
শুধু বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জনাব তারেক রহমানই নন, জাতীয় স্থায়ী কমিটির সম্মানিত সদস্য বাবু গয়েশ্বর চন্দ্র রায়সহ বেশ কয়েকজন সদস্যকে নিয়েও একই ধরনের ডিপ ফেইক ভিডিও তৈরি করা হয়েছে। বিএনপি তথ্য ও প্রযুক্তি দপ্তরের তাৎক্ষণিক তৎপরতায় ফেসবুক এবং ইউটিউবে থাকা এমন ডিপ ফেইক ভিডিওগুলোকে শনাক্ত করে সেগুলো অপসারণের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। কিন্তু সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় এহেন রীতিবিরুদ্ধ অশালীন ও অপকর্মের হোতারা হয়তো এইসব ভিডিও দিয়ে মেসেজ আদান—প্রদানকারী এ্যাপ মেসেঞ্জার, হোয়াটসঅ্যাপ, ইমো বা ভাইবার ব্যবহার করে আবারো এমন তৎপরতা চালাতে পারে। মিথ্যা অপপ্রচার আর অনাচারের সৃষ্টি ডামি সরকারের সারাক্ষণের সঙ্গী।
তাই আমি বিএনপির সকল পর্যায়ের নেতা—কর্মী ও সমর্থকসহ দেশ—বিদেশের সকল মানুষকে সুপ্রিয় সাংবাদিক ভাইবোনদের মাধ্যমে অবহিত করতে চাই—আপনারা এ সকল ডিপ ফেইক ভিডিও থেকে সতর্ক থাকবেন। বিএনপি’র কোন নেতা কখনোই এভাবে ভিডিও কল করে কারো কাছে টাকা চাইবেন না এই বিশ্বাসটা আপনাদের নিজেদের মধ্যে রাখবেন। কেউ যদি এভাবে ভিডিও কলে আপনাদের কাছে টাকা চায় তাহলে সাথে সাথে সেটা দলীয় নেতৃবৃন্দকে অবহিত করুন যাতে সেটার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায়।
এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন যে, গত ৭ই জানুয়ারির ডামি নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগ সরকারের মিথ্যা উন্নয়নের বর্ণনা দিয়ে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মিডিয়ার এ্যাঙ্কর ও লোগো ব্যবহার করে বেশ কিছু ডিপ ফেইক ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছাড়া হয়েছিল। একই সাথে ঢাকাস্থ যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস এবং বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মহোদয়ের অফিশিয়াল বক্তব্য প্রদানের ভিডিওকে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ব্যবহার করে বিকৃত ডিপ ফেইক ভিডিও তৈরি করা হয়েছিল। বিষয়টির গুরুত্ব অনুধাবন করে ফিন্যান্সিয়াল টাইমসের প্রতিবেদক বেঞ্জামিন পার্কিন ২০২৩ সালের ১৪ই ডিসেম্বর একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিলেন। সেখানে দেখানো হয়েছিল কিভাবে আওয়ামী লীগ সরকারপন্থী একটি দুষ্কৃতিকারী চক্র আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ব্যবহার করে এমন ভিডিও তৈরি করছে।
বিএনপির তথ্যপ্রযুক্তি দপ্তরের অনুসন্ধানে প্রমাণ পাওয়া গেছে যে, আওয়ামী লীগের হয়ে বিরোধীদলকে হেয় করার জন্য এহেন অপতৎপরতার নেতৃত্ব দিচ্ছে ‘নাহিদ রেইন’ নামে একজন প্রতারক ও জেল খাটা দাগি অপরাধী। অত্যন্ত দুঃখজনক হলেও সত্য যে, এই দাগি অপরাধীকে অনলাইনে এবং অফলাইনে প্রকাশ্যে প্রমোট করছে ভিন দেশের প্রভাবশালী একজন ব্যক্তি। নাহিদ রেইন এর টুইটার হ্যান্ডেলের কর্মকান্ড পর্যবেক্ষণ করলেই এই দুঃখজনক অপকর্মের সত্যতা পাওয়া যায়।ডিপফেক ভিডিও তৈরি করে বিএনপি নেতৃবৃন্দের নামে চাঁদাবাজির অপরাধে অবিলম্বে ‘নাহিদ রেইন’ নামক প্রতারক দুষ্কৃতিকারীকে গ্রেফতারের জন্য আমরা দাবি জানাচ্ছি।ধন্যবাদ সবাইকে। আল্লাহ হাফেজ।
আপনার মতামত লিখুন :